গৌরীপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে অনিয়মের অভিযোগে উত্তেজনা

গৌরীপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে অনিয়মের অভিযোগে উত্তেজনা
সাবরেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ
ময়মনসিংহের গৌরীপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে সৃষ্টি হয়েছে চরম উত্তেজনা ও আতঙ্কের পরিবেশ। অফিসের সাবরেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দলিল লেখকরা একাধিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি পূর্ববর্তী সাবরেজিস্ট্রারদের সময়ের করা প্রায় ৬০ শতাংশ দলিল বাতিল করেছেন। এমনকি সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্তৃক খারিজকৃত প্রায় ৪০ শতাংশ দলিলও নিজ সিদ্ধান্তে বাতিল করে দেন। এতে সাধারণ জনগণ দলিল নিবন্ধন করতে গিয়ে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন।
এছাড়া সামান্য ভুল পেলেই দলিল লেখকদের মৌখিকভাবে বরখাস্ত করার অভিযোগ রয়েছে। ৫৫ জন দলিল লেখকের মধ্যে বর্তমানে প্রায় ৪৫ জনই বরখাস্ত অবস্থায় আছেন। ফলে অফিসে কাজকর্মে স্থবিরতা নেমে এসেছে।
দলিল লেখকরা আরও অভিযোগ করেছেন, সাবরেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলাম প্রতি দলিল থেকে অবৈধভাবে “সেরেস্তা” নামে টাকা আদায় করেন। এতে সহায়তা করেন অফিস সহকারী আমিনুল ইসলাম। প্রতিদিন এ চক্রের মাধ্যমে প্রায় ৪-৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া নিজের প্রভাব খাটিয়ে তিনটি দলিল লেখকদের বসার ঘর ভেঙে ফেলা, পুরাতন সাবরেজিস্ট্রি অফিস ভবন বিনা দরপত্রে সংস্কার করে এর অংশ বিক্রি করা, এমনকি পৌরসভার চারটি লেট্রিনের মধ্যে দুটি ভেঙে ফেলার ঘটনাও ঘটেছে। এসব কর্মকাণ্ডে সরকারের প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
এই অবস্থার প্রতিবাদে গৌরীপুর দলিল লেখক সমিতি গত ১২ অক্টোবর (রবিবার) বিকেলে সমিতির কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা করে। সভায় সভাপতি কারিমুল হাছি বেশ শাহিদ মুনসী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “আর কাউকে বিনা কারণে বরখাস্ত করতে দেওয়া হবে না।”
বিষয়টি ইতোমধ্যে জেলা রেজিস্ট্রারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে গৌরীপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখক ও সাধারণ জনগণের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
—কাগজের আলো প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ
