লালন তিরোধান দিবসে সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘের বাউল গানের আসর

লালন তিরোধান দিবসে সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘের বাউল গানের আসর
আজ ১৭ অক্টোবর ২০২৫ বাংলাদেশে প্রথমবারের মত পালিত হয়েছে লালন তিরোধান দিবস। সারাদেশের ন্যায় দিবসটি ঘটা করে পালন করেছে ময়মনসিংহের গণসাংস্কৃতিক সংগঠন সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘ। তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে সংগঠনটি নগরীর জয়নুল উদ্যান ব্যাটবল চত্বর সংলগ্ন বধ্যভূমি প্রাঙ্গণে বাউল গানের আয়োজন করে। বাউল গানের আসরটি বিকাল ০৩ ঘটিকায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা ০৭ ঘটিকা পর্যন্ত চলমান থাকে। প্রকৃতির ছায়াতলে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে আয়োজিত সহজাত ভাবধারার এই আয়োজনটি অগণিত দর্শকশ্রোতা উপভোগ করেন। আয়োজনটিকে কেন্দ্র করে উৎসবের আমেজ দৃশ্যমান হয়। গ্রামবাংলার বাউলশিল্পীরা দরাজ গলায় একের পর এক লালনের গান পরিবেশন করে দর্শকশ্রেতাদের মোহাবিষ্ট করে রাখেন। বাঁশি, বেহালার সুর চারিদিকে ছড়িয়ে দেয় মুগ্ধ আবেশ! যে আবেশে মোহমান্বিত হয় অনুষ্ঠানস্থল ও এর আশেপাশের মানুষজন।
বাউল গানের আসর আয়োজন সম্পর্কে সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, বর্তমান সরকার ফকির লালনের তিরোধান দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করায় আমরা সংহতি জ্ঞাপন করে বাউল গান তথা লালনের গানের আয়োজন করেছি। বাউলকূলের শিরোমনি ফকির লালন জাতপাতের উর্ধ্বে উঠে মানুষের জয়গান গেয়েছেন। সৃষ্টিকর্তা, সৃষ্টিতত্ত্ব, দেহতত্ত্বের কথা বলেছেন। মানুষে মানুষে হিংসা হানাহানির বিপরীতে তিনি ভ্রাতৃত্ববোধের কথা বলেছেন তার গানে। আজ বিশ্বময় যে হিংসা অস্থিরতা বিরাজমান তার প্রেক্ষিতে লালনের গানের আবেদন অপরিসীম বলে মনে করি।
তিনি আরো বলেন, বাউল গান বাঙালি জাতির শেকড়ের সংস্কৃতি। যা জাতিসংঘের ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত অন্যতম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এই শেকড়ের সংস্কৃতির পতাকা আমাদের উড়াতে হবে। প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে হবে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গূরুত্ব। যাতে প্রজন্ম তার শেকড়ের সংস্কৃতি লালন, ধারণ করে জাতীয় স্বকীয়তা নিয়ে এগিয়ে যায়। সুস্থ সংস্কৃতি সুস্থ মানসিকতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুস্থ সংস্কৃতির অন্যতম ঘরনা হলো বাউল গান তথা লালনের গান।
লালন তিরোধান দিবসের এই আয়োজনে গান পরিবেশন করেন বাউল আব্দুল জব্বার, বাউল দুলাল সরকার, বাউল আনোয়ার সরকার, বাউল নাগ দুলাল, বাউল গোপাল চন্দ্র, বাউল স্বদেশ ও বাউল রাজু সরকার। বাদ্যযন্ত্রে সঙ্গত করেন হারমোনিয়ামে আব্দুল কাদির, বাংলা ঢোলে সুমন, বাঁশিতে মো: জাহাঙ্গীর আলম ও রাবাবে হাবিব।
