নান্দাইলে আইনজীবী সহকারীর ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও দুই লাখ টাকা ছিনতাই: প্রশ্ন উঠছে কেন ৩৯৪ ধারায় মামলা রুজু হবে না?
নান্দাইলে আইনজীবী সহকারীর ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও দুই লাখ টাকা ছিনতাই: প্রশ্ন উঠছে কেন ৩৯৪ ধারায় মামলা রুজু হবে না?
ক্রাইম রিপোর্টার বিল্লাল হোসেন মানিক
ময়মনসিংহের নান্দাইলে প্রকাশ্য দিবালোকে এক আইনজীবী সহকারীর ওপর বটি দা ও লোহার রড নিয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম এবং দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের প্রশ্ন—ঘটনার প্রকৃতি সশস্ত্র ছিনতাইয়ের (৩৯৪ ধারার) অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও কেন মামলাটি ওই ধারায় রুজু করতে ওসি সাহেবের সমস্যার মুখে পড়তে হবে?
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং তারিখ ভোরে ময়মনসিংহ জজ কোর্টের আইনজীবী সহকারী মোঃ নূরুল ইসলাম (৬০) নিজ বাড়ি বাঁশহাটি থেকে অটোরিকশাযোগে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে বাঁশহাটি সাকিনস্থ মরহুম সাঈদ সরকারের বাড়ির সামনে পৌঁছালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অভিযুক্তরা পথরোধ করে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামী মোসলেম উদ্দিন (৫৫), তার দুই ছেলে শহিদুল ইসলাম (৩২) ও জহিরুল ইসলাম (২৮) মিলে ভুক্তভোগীর ওপর হামলা চালায়। প্রথমে শহিদুল বটি দা দিয়ে নূরুল ইসলামের মাথায় কোপ দিতে চাইলে তিনি প্রতিরোধ করলে কোপটি তার ডান হাতের কনুইয়ের নিচে পড়ে গুরুতর হাড়ভাঙ্গা জখম হয়। এরপর মোসলেম উদ্দিন জোরপূর্বক ভুক্তভোগীর পকেট থেকে মেয়ের জন্য রাখা দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। শহিদুল ও জহিরুল একযোগে বটি দা ও লোহার রড দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে নূরুল ইসলামের দুই পায়ে মারাত্মক জখম করে।
স্থানীয়রা—মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ শরিফুল ইসলাম, মোঃ হাবিবুর রহমান শেখ, মোঃ সবুজ মিয়া, মোঃ জহিরুল ইসলাম ও মোঃ কামাল মিয়া সহ আরও অনেকে দৌড়ে আসলে আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় আহত নূরুল ইসলামকে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। বর্তমানে তিনি সেখানেই মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন।
ভুক্তভোগীর ছেলে সাহিদুল ইসলাম অভিযোগ দায়ের করেছেন নান্দাইল মডেল থানায়। তিনি বলেন, “আমার বাবাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করা হয়েছে এবং নগদ দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। এটি সরাসরি দস্যুতার (৩৯৪ ধারার) ঘটনা। কিন্তু থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গিয়ে শুনছি, মামলাটি ৩৯৪ ধারায় নেয়া হবে না। তাহলে প্রশ্ন ওঠে—কেন আসামিদের বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে?”
এ বিষয়ে সচেতন মহল বলছে, প্রকাশ্যে অস্ত্র ব্যবহার করে এভাবে জখম করা ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়া সরাসরি বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৯৪ ধারার আওতায় দস্যুতার মামলা হওয়ার কথা। তাই স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে এবং তারা দ্রুত ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
এখন প্রশ্ন একটাই—এমন স্পষ্ট ঘটনার পরও কেন ৩৯৪ ধারায় মামলা রুজু করতে গড়িমসি হচ্ছে? নান্দাইল মডেল থানার ওসি সাহেবের সমস্যা কোথায়?
