ময়মনসিংহে মাদকবিরোধী অভিযানে গতি, কিন্তু রাঘববোয়ালরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে!

ময়মনসিংহে মাদকবিরোধী অভিযানে গতি, কিন্তু রাঘববোয়ালরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে!
ময়মনসিংহ, ১৯ জুলাই ২০২৫:
ময়মনসিংহ মডেল কোতোয়ালি থানায় নতুন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) যোগদানের পর থেকে বদলে যেতে শুরু করেছে শহরের চিত্র। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও অভিযান, উদ্ধার হচ্ছে মাদকদ্রব্য, গ্রেফতার হচ্ছেন মাদকসেবী ও খুচরা কারবারিরা। তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—এই চক্রের পেছনে থাকা রাঘববোয়ালদের কেন এখনো স্পর্শ করা যাচ্ছে না?
সূত্র জানায়, ওসি সাহেবের নেতৃত্বে বিগত কয়েক সপ্তাহে শতাধিক মাদকসেবী, ছোটখাটো কারবারি—স্থানীয়ভাবে যাদের ‘চিনুপুটি’ বলে আখ্যায়িত করা হয়—তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ইয়াবা, গাঁজা, ফেন্সিডিল এমনকি মদ উদ্ধার হয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এসব অভিযান নিঃসন্দেহে সাহসিকতার পরিচায়ক, কিন্তু চক্রের মূল গডফাদাররা এখনো অধরা।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে পাইকারি দামে আসা মাদকদ্রব্য সড়কপথে ময়মনসিংহে আসে নির্দিষ্ট ‘ইস্পটে’। এসব পয়েন্টে পৌঁছানোর পর তা ছড়িয়ে পড়ে নগরীর অলিগলিতে। চক্রের সঙ্গে যুক্তদের অনেকের নামের সঙ্গে রয়েছে রাজনৈতিক, সামাজিক কিংবা ‘উচ্চমহলের’ পরিচয়ের ভারি টাইটেল—যার জোরেই তারা আজও থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, “মাদক নিয়ন্ত্রণে মাঠপর্যায়ের চেষ্টার ঘাটতি নেই। তবে যাদের ছায়ায় এই সিন্ডিকেট চলে, তাদের দিকে হাত বাড়ালেই চাপ আসে নানা দিক থেকে।”
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, শুধুমাত্র নিচুতলার লোকজনকে ধরলে সমস্যার মূল সমাধান হবে না। প্রয়োজন গোড়ায় কোপ—যারা মাল সংগ্রহ করে, যারা ভাগ করে, যারা নিরাপত্তা দেয়—তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
তবে আশা এখনো আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি দৃঢ়তা ধরে রাখে এবং সবার সহযোগিতা পায়, তাহলে একদিন হয়তো ধরা পড়বে সেই রাঘববোয়ালগুলোও, যাদের ছায়ায় এতদিন ময়মনসিংহে মাদকের সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছে।
ইনশাআল্লাহ, ময়মনসিংহ আবারও ফিরে পাবে মাদকমুক্ত শহরের পরিচয়—এই প্রত্যাশা সবার।
