কুষ্টিয়ায় গাছ সুরক্ষা কর্মসূচি: পরিবেশ রক্ষায় মাসব্যাপী পেরেক অপসারণ অভিযান শুরু


কুষ্টিয়ায় গাছ সুরক্ষা কর্মসূচি: পরিবেশ রক্ষায় মাসব্যাপী পেরেক অপসারণ অভিযান শুরু
রফিকুল ইসলাম, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের যৌথ উদ্যোগে গাছ সুরক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মাসব্যাপী পেরেক অপসারণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে। পরিবেশ ও গাছের সুরক্ষার লক্ষ্যে নেওয়া এই উদ্যোগের মাধ্যমে গাছের স্বাস্থ্য রক্ষা ও অবৈধ বিজ্ঞাপন ঠেকানো হবে।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কুষ্টিয়া কালেক্টর চত্বরে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোঃ তৌফিকুর রহমান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার সরকার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল আলম। এছাড়াও কুষ্টিয়া বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিবেশ রক্ষায় পেরেক অপসারণের গুরুত্ব
বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, গাছে পেরেক ঠুকে বিজ্ঞাপন টানানো গাছের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এটি গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত করে, অনেক সময় গাছ মারা যায়। তারা বলেন, পরিবেশ রক্ষায় শুধু গাছ লাগালেই হবে না, গাছের সঠিক পরিচর্যা ও সংরক্ষণও জরুরি।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোঃ তৌফিকুর রহমান বলেন, “গাছ আমাদের সবচেয়ে বড় পরিবেশবান্ধব সম্পদ। গাছে পেরেক ঠোকা বন্ধ না করলে পরিবেশের ক্ষতি হবে এবং ভবিষ্যতে এটি আইন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, বনভূমি উজাড় হওয়ায় বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা বেড়েছে। এ থেকে বাঁচতে প্রচুর গাছ লাগাতে হবে এবং সচেতনতা তৈরি করতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি দেশের মোট ভূখণ্ডের ২৫% বনভূমি থাকা প্রয়োজন, অথচ বাংলাদেশে সরকারি হিসাবে এটি মাত্র ১৫.৫৮%। অপরদিকে, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বনভূমির পরিমাণ ২২.৭%। শিল্পায়ন, নগর উন্নয়ন ও অবৈধ দখলের ফলে বনভূমি দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে, যা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে।
পরিবেশ রক্ষায় করণীয়
বিশেষজ্ঞরা বলছেন,
✔️ বিজ্ঞাপনের জন্য গাছে পেরেক ঠোকা বন্ধ করতে হবে।
✔️ বনভূমি সংরক্ষণ ও নতুন গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
✔️ সচেতনতা বাড়াতে প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন।
এই কর্মসূচির মাধ্যমে কুষ্টিয়ায় পরিবেশ রক্ষায় এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।