সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার নারী সাংবাদিক—বিএমইউজের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার নারী সাংবাদিক—বিএমইউজের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ
রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী থানার বালুরঘাট এলাকায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী সাংবাদিক। সোমবার (তারিখ) রাত ১টার দিকে একটি নির্মাণাধীন ভবনে রাতভর তাকে পাশবিক নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার পল্লবী থানায় একটি মামলা হয়েছে।
সাহসী সাংবাদিককে নির্মম নির্যাতন—কে দেবে নিরাপত্তা?
ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক একটি জাতীয় দৈনিকে সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এক মাস আগে তিনি জানতে পারেন, একটি সংঘবদ্ধ চক্র ক্যান্টনমেন্টের মাটিকাটা এলাকায় নিরীহ নারী-পুরুষদের প্রলোভনে ফেলে অশ্লীল ভিডিও বানিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করছে। তিনি চক্রটির অপরাধ ফাঁস করতে নিজেই তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেন।
সোমবার রাত ১১টার দিকে তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তিনি মাটিকাটা এলাকার সিঙ্গার শোরুমের গলিতে যান। ঠিক তখনই মামলার উল্লেখিত আসামিরা (এনামুল হক, হামিদুর রহমান, ছোট ইয়াছিন, বড় ইয়াছিন, শাহীন, রবি, হাসান, আনু ও অজ্ঞাতনামা আরও ৮ জন) তাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে।
রাতভর নির্মম নির্যাতন!
অপরাধীরা প্রথমে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে, টেনে-হিঁচড়ে মাটিকাটা এলাকা থেকে পল্লবী থানার বালুরঘাটের একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যায়। সেখানকার তিন তলার একটি অন্ধকার ফাঁকা রুমে রাতভর তাকে গণধর্ষণ করা হয়।
পল্লবী থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিকটিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
বিএমইউজের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ—দ্রুত বিচার দাবি!
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএমইউজে) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব সোহেল আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিক খান এক যৌথ বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন,
“জাতির বিবেকে আর কত বিষধর ছোবল সহ্য করা হবে! গণধর্ষণের শিকার নারী সাংবাদিকের এই লোমহর্ষক ও অমানবিক ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত। আর কত স্ত্রী-সন্তান ধর্ষিত হলে সরকার নড়েচড়ে বসবে? আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আরও কত নারীর জীবন তছনছ হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে?”
তারা আরও বলেন, “শুধু ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করলেই হবে না, দ্রুততম সময়ের মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় আমরা—আর কোনো নারী যেন এমন ভয়ংকর পরিস্থিতির শিকার না হয়!
এই ঘটনায় শুধু সাংবাদিক সমাজ নয়, সারা দেশের মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছে। নারী সাংবাদিকদের নিরাপত্তা কোথায়? সত্যের পথে যারা এগিয়ে আসে, তাদের জন্য কি শুধুই ভয় আর মৃত্যু অপেক্ষা করছে?
সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জোর দাবি—এই নির্মম অপরাধের বিচার যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে হয়, যেন আর কোনো নারীকে এমন ভয়ংকর পরিণতির শিকার হতে না হয়!