টেকনাফে অপহৃত বগুড়ার জেলা ২ব্যক্তি পাহাড় হতে উদ্ধার ; সহযোগী অপহরণে জড়িত ৩ বিকাশ ব্যবসায়ী আটক

টেকনাফে অপহৃত বগুড়ার জেলা ২ব্যক্তি পাহাড় হতে উদ্ধার ; সহযোগী অপহরণে জড়িত ৩ বিকাশ ব্যবসায়ী আটক
জামাল উদ্দীন, কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি
বগুড়া জেলার মো. সবুজের সঙ্গে কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের আবদুল আমিন নামের তরুণের পরিচয় হয় দুই বছর আগে। বন্ধুত্বের সূত্রে একে অপরের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া-আসাও করতেন।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আবদুল আমিনের আমন্ত্রণে সবুজ তাঁর ভাইয়ের ছেলে মেহেদী হাসানকে নিয়ে টেকনাফে বেড়াতে আসেন। বেড়াতে আসার পর বন্ধু সবুজ ও তাঁর ভাইপো মেহেদীকে কৌশলে রোহিঙ্গা অপহরণ চক্রের সদস্যদের হাতে তুলে দেন আবদুল আমিন। এরপর অপহরণকারীরা দুজনকে নির্যাতন চালিয়ে ভিডিও ধারণের পর সবুজের স্ত্রীর কাছে পাঠায়। এ সময় দাবি করা হয় ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ। সবুজের স্ত্রী মুক্তিপণ হিসেবে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা পাঠান। তবে এরপরও দুজনের মুক্তি মেলেনি।
এ ঘটনায় ২ মার্চ মো. সবুজের বোন সুলতানা বেগম থানায় অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে মো. সবুজ ও মেহেদী হাসান হ্নীলার আবদুল আমিনের বাড়িতে বেড়াতে এসে অপহরণের শিকার হন বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়। পাশাপাশি মুঠোফোন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকার লেনদেনের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণ চক্রের অবস্থান নিশ্চিত হয় পুলিশ। এরপর টানা দুই দিন অভিযান চালিয়ে আজ মঙ্গলবার বিকেলে গহিন পাহাড় থেকে উদ্ধার করা হয় অপহৃত সবুজ ও মেহেদীকে। একই সময় অপহরণে জড়িত তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং মুক্তিপণের জন্য দেওয়া টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার এলাকার ইসলাম মিয়ার ছেলে খোরশেদ আলম (৩৫), হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াবাজার এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে মো. ইউসুফ (৩০) ও মৌলভীবাজার এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মো. ফয়সাল (১৯)।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, সবুজ ও মেহেদীকে অপহরণকারী চক্রের হাতে তুলে দেওয়া আবদুল আমিনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় অপহরণকারীর একটি পুরো চক্রকে শনাক্ত করতে পেরেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অপহরণ চক্রের বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। তিনি বলেন, অপহরণকারী চক্রের অনেকের নাম পাওয়া গেছে। তাঁদের ধরতে অভিযান চলছে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তিনজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।