ময়মনসিংহে এনটিভির সাংবাদিক মাসুদ বনাম প্রতিদিন কাগজের সাংবাদিক রেজা: আইনি লড়াই উত্তপ্ত

- তারখান লাইফস্টাইল স্টোর: পার্টনারশিপ ব্যবসার আড়ালে প্রতারণা, আদালতের রায়ে মাসুদ রানার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
রিপোর্টার: ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহ নগরীর ৭৮ শেওড়া ধোপাখোলা মোড়ে অবস্থিত “তারখান লাইফস্টাইল স্টোর” নামে একটি গার্মেন্টস ব্যবসা পার্টনারশিপ ভিত্তিতে শুরু করেছিলেন এনটিভির ক্যামেরাম্যান মাসুদ রানা, সোহাগ মাহমুদ, সোহেল রানা এবং চট্টগ্রামের বাসিন্দা রেজাউল করিম রেজা। চট্টগ্রামের রেজাউল করিম রেজা তার সকল সম্পদ বিক্রি করে এই ব্যবসায় যৌথ মালিকানা গ্রহণ করেন। তবে শুরুতে ভালো চললেও পরবর্তীতে ব্যবসাটির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও প্রতারণার গুরুতর অভিযোগ উঠে আসে।
নারী আসক্তি ও প্রতারণার অভিযোগ
ব্যবসার অন্যতম পার্টনার মাসুদ রানা বিভিন্ন নারীর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন এবং ব্যবসার তহবিল থেকে নিয়মিত টাকা সরিয়ে নিতে থাকেন বলে অভিযোগ করেন রেজাউল করিম রেজা। একপর্যায়ে ষড়যন্ত্র করে রেজাউল করিম রেজাকে ব্যবসা থেকে বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি।
পরবর্তীতে, মাসুদ রানার আস্থাভাজন মো. কামাল হোসেন ও প্রান্ত সাংবাদিকের মাধ্যমে একটি ৩০০ টাকার তিনটি স্ট্যাম্পের মাধ্যমে চুক্তি সম্পাদিত হয়। চুক্তিতে বলা হয়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রেজাউল করিম রেজাকে তার পাওনা টাকা পরিশোধ করা হবে এবং তাকে চেক প্রদান করা হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে টাকা না পাওয়ায় রেজাউল করিম রেজা আদালতের দ্বারস্থ হন।
আদালতের রায় ও গ্রেফতারি পরোয়ানা
বিচারিক কার্যক্রম শেষে আদালত রেজাউল করিম রেজার পক্ষে রায় দেন এবং মাসুদ রানার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। তবে আইনি বাধ্যবাধকতা এড়াতে মাসুদ রানা বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো শুরু করেন।
ফেসবুক আইডি খুলে অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি
অভিযোগ রয়েছে যে, মাসুদ রানা ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে বিভিন্ন সাংবাদিক ও ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালান। তিনি “দৈনিক পতিতালয়” নামে একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি তৈরি করে সাংবাদিক ইউনুসসহ স্থানীয় সাংবাদিকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন এবং রেজাউল করিম রেজার বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত করতে চান।
এর আগেও, ২০১৭ সালে মাসুদ রানা কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ইদ্রিস খান ও খায়রুল আলম রফিকের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেন। তদন্তে দেখা যায়, তিনি ৩১টি ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে ইদ্রিস খানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালান। পরবর্তীতে সিআইডি তদন্তে প্রমাণিত হয় যে, ২৯টি ফেসবুক আইডি মাসুদ রানার সাথে সংশ্লিষ্ট।
রেজাউল করিম রেজার আহ্বান
রেজাউল করিম রেজা ময়মনসিংহের সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, তিনি কারো বিরুদ্ধে কোনো ভুয়া ফেসবুক আইডি পরিচালনা করেন না। তিনি সকল সহকর্মীদের সঙ্গে সততা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে কাজ করতে চান এবং এ বিষয়ে কোনো বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, যদি কেউ তার বক্তব্য বিশ্বাস না করেন, তাহলে তিনি সিআইডির সকল কাগজপত্রসহ বসতে প্রস্তুত। তিনি সকল সাংবাদিকদের আহ্বান জানান যেন তারা প্রতারকদের ফাঁদে পা না দেন এবং প্রকৃত সত্য উদঘাটন করেন।
কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন
এ ধরনের ব্যবসায়িক প্রতারণা ও অনিয়ম বাজার ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
এখন দেখার বিষয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো কবে নাগাদ মাসুদ রানাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এবং রেজাউল করিম রেজা তার ন্যায্য পাওনা ফেরত পান কিনা।