দেবরের ছুরিকাঘাতে ভাবির মৃত্যু: পারিবারিক দ্বন্দ্বে রক্তাক্ত সংঘর্ষ


দেবরের ছুরিকাঘাতে ভাবির মৃত্যু: পারিবারিক দ্বন্দ্বে রক্তাক্ত সংঘর্ষ
মোস্তফা আল মাসুদ, বগুড়া
বগুড়ার কাহালুতে পারিবারিক বিরোধের জেরে দেবরের ছুরিকাঘাতে ভাবির মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে কাহালু পৌরসভার পাল্লাপাড়া গ্রামে এ সংঘর্ষ ঘটে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১টার দিকে রুপালী (৩৮) মারা যান।
দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব, এক রাতের ট্র্যাজেডি
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টিউবওয়েলের পানি ও বিদ্যুৎ বিল সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে নিহত রুপালীর স্বামী মো. পলাশ (৪২) এবং তার সৎ ভাই মোজাম্মেল হকের (৩০) পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। সেই বিরোধই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের রূপ নেয় মঙ্গলবার রাতে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৯টার দিকে দুই পরিবারের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। একপর্যায়ে মোজাম্মেল ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে ভাবি রুপালীর পেটে আঘাত করেন। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
গুরুতর আহত অবস্থায় রুপালীকে কাহালু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে রাত ১টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আসামিরা গ্রেপ্তার, মামলা দায়ের
এ ঘটনায় রুপালীর ভাই সুমন বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—মোজাম্মেল হকের স্ত্রী আফরোজা (২৫), বাবা রাশেদ আলী (৬০) ও মা মরিয়ম (৫৫)। মূল অভিযুক্ত মোজাম্মেল পুলিশের হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কাহালু থানার ওসি আব্দুল হান্নান জানান, ময়নাতদন্ত শেষে রুপালীর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ঘটনার মূল হোতা মোজাম্মেলসহ বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এ হত্যাকাণ্ডে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিরোধের এমন মর্মান্তিক পরিণতিতে হতবাক ও আতঙ্কিত।