
গাজিরভিটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন, স্থানীয়দের নানা অভিযোগ
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার গাজিরভিটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের প্রতিবাদে আজ রবিবার (২ মার্চ) উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে স্থানীয়দের আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে চেয়ারম্যান মান্নান
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, আব্দুল মান্নান দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়নের সাধারণ জনগণকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি ও অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তোলা হয়।
ভাষাশহীদ আব্দুল জব্বারের ভাতিজা মো. আতিকুল্লাহ বলেন,
“আমার বড় ভাই সিরাজুল ইসলাম ভাষাশহীদ আব্দুল জব্বার স্মৃতি স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য ৫০ শতক জায়গা দান করেছিলেন। এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের পরিবারকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন কৌশলে বিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেন আব্দুল মান্নান। প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর তিনি তার পরিবারের পাঁচজনকে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দিয়েছেন, অথচ ভাষাশহীদের পরিবারের কেউ চাকরি পাননি।”
ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ
সাবেক ইউপি সদস্য এমদাদুল হক বলেন,
“মান্নানের নিজের কিছুই ছিল না। গফরগাঁও থেকে আসার পর তিনি এলাকায় প্রাইভেট পড়িয়ে সংসার চালাতেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর তার ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। এরপর তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। পরবর্তীতে, জুয়েল আরেং এমপি হওয়ার পর তার ক্ষমতা আরও বেড়ে যায়।”
তিনি আরও বলেন,
“আমি ইউপি সদস্য নির্বাচিত হলেও মান্নানের চাঁদার দাবি পূরণ না করায়, রাত ৯টার পর নির্বাচনের ফল পরিবর্তন করে আমাকে পরাজিত ঘোষণা করা হয়। এখন তিনি আলিশান বাড়ি নির্মাণ করছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় জমি কিনেছেন। এত অর্থ তিনি কীভাবে পেলেন? তদন্ত করলেই তার দুর্নীতি বেরিয়ে আসবে।”
সমবায় সমিতির অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
গুমুরিয়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি নাজমুল ইসলাম অভিযোগ করেন,
“গুমুরিয়া পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মান্নান বিনা ভোটে দায়িত্ব নিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো সমিতির সব অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।”
স্থানীয়দের দাবি
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া এলাকাবাসী চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের অপকর্ম তদন্তের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে বলে এলাকাবাসী মনে করেন।