
ময়মনসিংহে নিষিদ্ধ পল্লী থেকে তিন তরুণী উদ্ধার: সরদারনিদের ঘরেই ছিল বন্দী জীবন
মোঃ বিল্লাল হোসেন মানিক সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার ময়মনসিং বিভাগীয় প্রধান।
ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ এক সাহসিক অভিযানে নিষিদ্ধ পল্লী থেকে তিনজন তরুণীকে উদ্ধার করেছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন কোতোয়ালি মডেল থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান হাফিজ।
বিশেষ সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সরাসরি অভিযান চালানো হয় শহরের নিষিদ্ধ পল্লীর সরদারনি জোহরা, সরদারনি নাসিমা ও কুখ্যাত গাল কাটা পারভীনের টিনশেড ঘরগুলোতে। এখান থেকেই উদ্ধার করা হয় তিন তরুণীকে, যাদের বয়স ১৮ বছরের ওপরে। তারা সবাই সম্প্রতি বিক্রির মাধ্যমে এ পল্লীতে এসেছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উদ্ধারকৃত তরুণীদের জোরপূর্বক এ পেশায় ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। কেউ কেউ প্রেমের ফাঁদে ফেলে, কেউবা কাজ দেওয়ার প্রলোভনে এনে এ পথে ঠেলে দেয় তাদের অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে। এই নিষিদ্ধ পল্লীর অদৃশ্য দেওয়ালের পেছনে কত যে কান্না, কষ্ট আর নির্যাতনের গল্প লুকিয়ে থাকে—সেটি কেবল ভুক্তভোগীরাই জানে।
এ বিষয়ে অফিসার হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, “আমরা নিয়মিতভাবেই এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কাজ করছি। নারী পাচার ও যৌন বাণিজ্যের বিরুদ্ধে পুলিশের অবস্থান জিরো টলারেন্স। আজকের উদ্ধারকৃত মেয়েদের সুরক্ষার পাশাপাশি তাদের পরিবার ও প্রকৃত পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।”
তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত তিন সরদারনির বিরুদ্ধে নারী পাচার, জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার অভিযোগে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। একই সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিন ধরে চলা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে।
এই ঘটনা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়—পতিতা পল্লীর আড়ালে কত হৃদয়বিদারক গল্প লুকিয়ে থাকে। প্রতিটি মুখে হাসি থাকলেও ভিতরে লুকানো থাকে নির্যাতনের অসংখ্য দাগ। এই তরুণীদের উদ্ধার যেন আরও অনেকের মুক্তির পথ খুলে দেয়—এটাই প্রত্যাশা।
বিস্তারিত প্রতিবেদন ও তরুণীদের পল্লীতে আসার হৃদয়বিদারক পটভূমি জানতে চোখ রাখুন আমাদের আগামী সংখ্যায়।