শম্ভুগঞ্জ বাজারে মোবাইল কোর্ট অভিযান: পাটজাত মোড়ক আইন ভঙ্গ করায় চালকলকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা — প্রশাসনের হুঁশিয়ারি, ছাড় নেই অবাধ্যদের
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার শম্ভুগঞ্জ বাজারে জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালিত হয় পাটজাত মোড়ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে। ৩০ জুলাই ২০২৫ তারিখে পরিচালিত এ অভিযানে দুটি চালকলকে প্লাস্টিক মোড়কের ব্যবহার করায় 'পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০'-এর আওতায় দুইটি মামলায় মোট ৬০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করা হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে আদায় করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের একদল দক্ষ ও সদা তৎপর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযানে সহায়তা করে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে—পাটজাত মোড়ক ব্যবহার আইন প্রয়োগে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ বলেন, পাট বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী সম্পদ। পরিবেশবান্ধব ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য এই উপকরণের ব্যবহার নিশ্চিত করতেই সরকার ২০১০ সালে আইন প্রণয়ন করে। চাল, গম, চিনি, ভুট্টা, সারসহ ২০টি পণ্যে বাধ্যতামূলকভাবে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু বেশ কিছু ব্যবসায়ী এখনো অবৈধভাবে প্লাস্টিক ব্যবহার করে চলেছেন, যা আইন লঙ্ঘন ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
ম্যাজিস্ট্রেটদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, “সরকারের আইন অমান্য করে কেউ ব্যবসা করতে পারবে না। এটি জাতীয় স্বার্থবিরোধী। ভবিষ্যতেও নিয়মিতভাবে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
এই অভিযান স্থানীয় ব্যবসায়ী মহলে আলোচনার ঝড় তোলে। অনেকে প্রশাসনের এই তৎপরতাকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে পাটজাত মোড়ক ব্যবহারে আরও সচেতন হবেন বলে জানান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্লাস্টিকের পরিবর্তে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার পরিবেশের জন্য যেমন নিরাপদ, তেমনি কৃষকদের জন্যও লাভজনক। দেশে পাটচাষীরা দীর্ঘদিন ধরে পণ্যের বাজার সংকটে ভুগছেন। সরকার যদি কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করে, তাহলে দেশীয় পাটশিল্প ঘুরে দাঁড়াবে এবং কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাবে।
জেলা প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বারবার ব্যবসায়ীদের পাটজাত মোড়ক ব্যবহারে সচেতন ও আইনানুগ হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। ব্যবসায়ী, মিল মালিক ও ডিলারদের বলা হয়েছে, এখনই আইন মানুন, না হলে মোবাইল কোর্টের মুখোমুখি হতে হবে।
শম্ভুগঞ্জের মোবাইল কোর্ট অভিযানে প্রশাসনের কণ্ঠে ছিল দৃঢ় বার্তা— “জাতীয় আইন ভাঙার কোনো সুযোগ নেই। পরিবেশ রক্ষায় এবং দেশের পাটশিল্প টিকিয়ে রাখতে সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
এমন জনসচেতনতামূলক ও কঠোর পদক্ষেপে ভবিষ্যতে অন্যান্য বাজারেও আইনের প্রয়োগ জোরদার হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।