ময়মনসিংহ শহরের আদমজী পাট গুদামের এক টকটকে যুবক হেলাল মড়ল। ছাত্রজীবনে কালিবাড়ি পুরাতন স্কুলে পড়াশোনা করা হেলাল মড়ল ব্রি ক্যাডেট স্কুল (বর্তমানে প্রিমিয়াম স্কুল) থেকে শিক্ষা লাভ করেন। রাজনীতির প্রতি তার অনুরাগ জন্মেছিল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ময়মনসিংহ আগমনের দিন, যখন তিনি সরাসরি তার সাথে হাত মেলানোর সুযোগ পান। সেই মুহূর্তেই তার মনে দেশপ্রেমের এক নতুন আলো জ্বলে ওঠে, যা তাকে আজ অবধি বিএনপির একনিষ্ঠ কর্মী করে রেখেছে।
হেলাল মড়ল ছাত্রজীবনেই বিএনপির ছাত্রসংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। তিনি সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে ছাত্রদলের সাথে যুক্ত থেকে রাজনীতির হাতেখড়ি নেন। তখন থেকেই তিনি বিশ্বাস করতেন, রাজনীতিই সমাজ পরিবর্তনের একমাত্র মাধ্যম।
ছাত্রজীবন শেষে তিনি জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলে যোগ দেন এবং রফিকুল শামীমের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এরপর বিএনপির দুঃসময়ে তিনি ছিলেন এক অবিচল কর্মী। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে জেল-জুলুম, নির্যাতন সহ্য করেছেন, তবুও দল ছাড়েননি। একাধিকবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্যে বাধা দেওয়া হয়েছে, এমনকি রাতে নিজ বাসায় পর্যন্ত থাকতে পারেননি।
অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা তাকে দলে ভেড়ানোর জন্য নানান লোভনীয় প্রস্তাব দিলেও তিনি বিএনপির প্রতি তার আস্থা অটুট রেখেছেন। বিএনপি তার আবেগের জায়গা, আদর্শের স্থান।
বর্তমানে হেলাল মড়ল ময়মনসিংহ শহরের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা এবং তিনি শহরের আকন্দ পরিবারের সঙ্গে থেকে রাজনীতি করে আসছেন। আকন্দ পরিবারের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় শহরের রাজনীতিতে তার অবস্থান আরও সুসংহত হয়েছে। এই পরিবারের সঙ্গে থেকে তিনি দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন এবং বিএনপিকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
চার দশক ধরে বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকা সত্ত্বেও হেলাল মড়লের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, দখলদারিত্ব বা অনিয়মের কোনো অভিযোগ নেই। রেলের মোড় ও আদমজী পাট গুদামের এলাকায় তিনি একজন জনপ্রিয় ও পরিচ্ছন্ন নেতা হিসেবে পরিচিত। দল ও জনগণের জন্য নিরলসভাবে কাজ করলেও নিজের স্বার্থের জন্য কখনো কিছু চাননি।
দলের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে তিনি আশা করেন, ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতারা এবার তাদের যথাযথ মূল্যায়ন পাবেন। হাইব্রিড ও অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকিয়ে প্রকৃত কর্মীদের সম্মানিত করা হবে। বিএনপির দুঃসময়ে যারা পাশে ছিল, তাদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হবে।
হেলাল মড়ল মনে করেন, আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশের সুশাসন ফিরিয়ে আনতে বিএনপির বিকল্প নেই। তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন, তারেক রহমান দ্রুত দেশে ফিরে এসে নেতৃত্ব দেবেন।
চার দশকের রাজনীতির পথচলায় হেলাল মড়ল আজও বিএনপির প্রতি অবিচল। তার ত্যাগ ও নিষ্ঠার যথাযথ মূল্যায়ন হবে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।