ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অভিযানে গর্ভফুল সংগ্রহ ও অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয়ের অভিযোগে একটি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে অবৈধ উপায়ে গর্ভফুল সংগ্রহ করে তা হিমায়িত করে ঢাকায় সরবরাহ করছিল।
গত ৭ মার্চ ২০২৫ তারিখে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা শাখা জানতে পারে, একটি পিক-আপ ভ্যানে মানবদেহের অঙ্গপতঙ্গের অংশ (গর্ভফুল) হিমায়িত প্যাকেটজাত করে ঢাকার ধামরাইয়ের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে কোতোয়ালী মডেল থানার বলাশপুর হাক্কানীর মোড়, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সামনে অভিযান চালিয়ে পিক-আপটি আটক করা হয়।
পিক-আপটি তল্লাশি করে উদ্ধার করা হয়—
✅ ৩৫০টি পলিথিনে মোড়ানো গর্ভফুল সাদৃশ্য অংশ
✅ ৩টি ক্যাটগার্ডসহ সুই
✅ ১টি খোলা ইনজেকশনের অ্যাম্পুল
✅ ১টি ব্যবহৃত গ্লাভস
অভিযানকালে গাড়ির চালক মো. রুহুল আমিন (৩৫)-কে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার ধামরাইসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও চারজনকে গ্রেফতার করা হয়—
1️⃣ নজরুল ইসলাম (৫৪) – চক্রের মূলহোতা, হাসপাতাল ও ক্লিনিকের কর্মচারীদের মাধ্যমে গর্ভফুল সংগ্রহ করতেন।
2️⃣ মো. মুমিনুর রহমান (৩২) – ঢাকার ধামরাইতে গর্ভফুল সংগ্রহ ও বিতরণ করতেন।
3️⃣ দেওয়ান মো. অমিত (৩১) – গর্ভফুল প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
4️⃣ মো. খুরশিদ আলম (২৫) – চক্রের অন্যতম সদস্য।
5️⃣ মো. রুহুল আমিন (৩৫) – পিক-আপ চালক, গর্ভফুল পরিবহনে যুক্ত ছিলেন।
তদন্তে জানা যায়, নজরুল ইসলাম (৫৪) হাসপাতাল ও ক্লিনিকের কর্মচারীদের মাধ্যমে অবৈধভাবে গর্ভফুল সংগ্রহ করতেন। পরে তা হিমায়িত করে রুহুল আমিনের মাধ্যমে ঢাকার ধামরাইয়ে সরবরাহ করা হতো। এরপর মুমিনুর রহমান ও অমিত এই গর্ভফুল প্রক্রিয়াজাত ও অবৈধভাবে বিক্রয় করতেন।
উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শক্রমে উদ্ধারকৃত গর্ভফুল ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয় এবং ফরেনসিক পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মাহাবুবুল আলম ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তানভিন সুলতানা এই আলামত পরীক্ষা করে মতামত প্রদান করেন।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
⏩ যেকোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিকে সন্দেহজনক কার্যক্রম দেখলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান।
⏩ মানবদেহের অংশ কেনাবেচা বা সংরক্ষণ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
⏩ এ বিষয়ে আরও তথ্য থাকলে নিকটস্থ থানায় অথবা জেলা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) যোগাযোগ করুন।