বাণিজ্য মেলা, ব্যবসা ও বাস কাউন্টার দখল: বিকাশ দাশের বিতর্কিত সাম্রাজ্যের অনুসন্ধান
বিশেষ প্রতিনিধি ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক মহলে বিতর্কিত এক নাম বিকাশ দাশ। এক সময়কার আওয়ামী লীগ নেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আমিনুল হক শামীমের আস্থাভাজন এই ব্যক্তি, আজ নানা বিতর্ক ও অনিয়মের অভিযোগে আলোচিত।
বিকাশ দাশ ও জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন আরিফ একসময় ব্যবসায়িক পার্টনার ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, ২০০৯ সালে বিকাশ দাশ কৌশলে তার পার্টনারকে ব্যবসা থেকে সরিয়ে দেন এবং তাকে বিএনপি নেতা হিসেবে ট্যাগ লাগিয়ে হেয় করার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে কাচারি আরিফ নামে অন্য একজনকে নিজের পার্টনার বানিয়ে ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন।
দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করে বিকাশ দাশ বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে ময়মনসিংহের বাণিজ্য মেলা পরিচালনার নামে তিনি কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার সময় তিনি প্রভাব খাটিয়ে বাণিজ্য মেলার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বিকাশ দাশ ঘোষণা দিয়েছেন, যতদিন তিনি বেঁচে থাকবেন, ততদিন কেউ ময়মনসিংহের বাণিজ্য মেলা তার কাছ থেকে নিতে পারবে না। এটি নিয়ে ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
শুধু বাণিজ্য মেলা নয়, একটি গুরুত্বপূর্ণ বাস কাউন্টারও দখল করেছেন বিকাশ দাশ। যখন আসল মালিকরা তাদের সম্পত্তি ফিরে পেতে চান, তখন তিনি তাদের হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করছেন।
জুলাই অভ্যুত্থানের পর বিকাশ দাশ নিজেকে হিন্দু নেতা হিসেবে প্রচার করে বিএনপির নেতাদের সাথে গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে রাজনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড় উঠেছে, যেখানে তাকে সুবিধাবাদী ও অনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলছেন, বিকাশ দাশের মতো দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ময়মনসিংহে অবৈধ দখলদারিত্ব আরও বাড়বে। তারা তার দখল করা ব্যবসা ও বাস কাউন্টার আসল মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন এবং প্রশাসনের কাছে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছেন।
প্রশ্ন রয়ে যায়: প্রশাসন কি অবশেষে এই দুর্নীতিবাজকে আইনের আওতায় আনবে?