মুক্তাগাছায় পশুর হাটে হামলা ও লুটপাট: বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

মুক্তাগাছায় পশুর হাটে হামলা ও লুটপাট: বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
মোঃ বিল্লাল হোসেন মানিক ক্রাইম রিপোর্টার ময়মনসিংহ।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার ত্রিমহোনি নতুন বাজার পশুর হাটে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল-যুবদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে ১০-১৫ জনের একটি দল হাটে প্রবেশ করে ক্যাশ কাউন্টার ভাঙচুর করে এবং লক্ষাধিক টাকা ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ করেছেন ইজারাদার।
হাট ইজারাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তাগাছার ত্রিমহোনি নতুন বাজার পশুর হাটের ইজারা প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। পৌর প্রশাসন ও বিএনপি নেতাদের মধ্যে গোপন সমঝোতার মাধ্যমে দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করলে বিভাগীয় কমিশনার দরপত্র বাতিল করে পুনরায় নতুন দরপত্র আহ্বানের সিদ্ধান্ত নেন।
নতুন দরপত্রের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ৪৫ লাখ ৪৬ হাজার ৬৯৩ টাকায় হাটের ইজারা পান মেসার্স শাহীন এন্টারপ্রাইজের মালিক শাহীন আলম। এতে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হন।
হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ
হাটের ইজারাদার তাওসিফ ইবনে মান্নান জানান, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই হাট পরিচালনা করে আসছি। কিন্তু এবার বিএনপির নেতারা প্রভাব খাটিয়ে আমাদের দরপত্র জমা দিতে বাধা দেয়। জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করার পর নতুন দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বুধবার দুপুরে ছাত্রদল-যুবদলের নেতাকর্মীরা হাটে হামলা চালায় এবং ক্যাশ কাউন্টার থেকে টাকা লুট করে নেয়।”
তিনি আরও বলেন, “তারা আমাদের আওয়ামী লীগের ট্যাগ দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে, যাতে আমরা হাট ছেড়ে দেই। অথচ আমরা শুধুমাত্র ব্যবসা করতে চাই, রাজনীতির সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।”
বিএনপির পাল্টা বক্তব্য
ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবুল বলেন, “হাটে কিছু তরুণ ঝামেলা করেছিল, কিন্তু আমাদের সিনিয়র নেতারা গিয়ে তাদের সরিয়ে এনেছে। টাকা ছিনতাইয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি।”
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা হাবিবুন্নবী খান সোহেল জানান, “বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যদি কেউ অপরাধে জড়িত থাকে, তাহলে দলীয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশের বক্তব্য
মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, “হাটে কিছু লোক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল। তবে তারা টাকা লুট করেছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমরা ঘটনাস্থলে ছিলাম এবং বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।”
এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।